জগন্নাথপুরে রানীগঞ্জ সেতুর ল্যাম্পপোষ্ট নষ্ট,সন্ধ্যা নামলেই বাড়ছে অপরাধ!!
জগন্নাথপুরবাসীর স্বপ্নের রানীগঞ্জ সেতু উদ্বোধন এর পর থেকেই সেতু ও সেতুর আশ-পাশের ল্যাম্পপোষ্ট গুলো নষ্ট হয়ে গেছে। যার ফলশ্রুতিতে সন্ধ্যার পর অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকছে সেতু ও এর আশপাশের এলাকা। ঘটছে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনাও। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল না হওয়ায় ও চোর চক্রকে সনাক্ত করতে না পারায় পরপর এসব ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
১৬ ই সেপ্টেম্বর রোজ মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে ও জানাযায়, সিলেট বিভাগের সবচেয়ে সর্ববৃহৎ সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরবাসীর স্বপ্নের রানীগঞ্জ সেতু ২০২২ সালের ৭ই নভেম্বর উদ্বোধন হওয়ার পর হাওড়বাসীর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছিল। রাজধানী শহট ঢাকার সাথে সুনামগঞ্জের দূরত্ব কমে যায় ৫৫ কিলোমিটার, অন্যদিকে সুনামগঞ্জের পাশের জেলা হবিগঞ্জে দুই ঘণ্টায় যাতায়াত করেন জেলাবাসী। এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা রানীগঞ্জ সেতুতে ঘুরতে আসেন। কুশিয়ারা নদীর ওপর নির্মিত রানীগঞ্জ সেতুটি উদ্বোধনের পরের দিন থেকে প্রথম একটি পরে আরেকটি এভাবে একে একে বর্তমানে সবকটি ল্যাম্পপোষ্ট নষ্ট হয়ে গেছে। যার ফলশ্রুতিতে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে অন্ধকারছন্ন এই সেতুর উপর ও আশ- পাশে চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ও দুর্ঘটনা অহরহ ঘটছে। এ নিয়ে উদ্বোধনের পর থেকে ধারাবাহিক এসব ঘটনায় জেলার মানুষের মধ্যে চলছে মিশ্র আলোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে সমালোচনার ঝড় বইছে। জনস্বার্থে ল্যাম্পপোষ্ট গুলো মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন এলাকার সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে স্থানীয়রা জানান, সেতু উদ্বোধনের পর থেকে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাজার হাজার যাত্রী ও যানবাহন এ সেতু দিয়ে চলাচল করছে। বহুল প্রত্যাশিত সেতুটি দেখতে হাজার হাজার দর্শনার্থী আসছেন এখানে। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে দুই পাড়ের কয়েক কিলোমিটার সংযোগ সড়কসহ পুরো সেতুটি। ঘটছে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। এতে নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছেন সেতুতে চলাচলকারী ও দর্শনার্থীরা। তাঁরা আরো বলেন, ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে ৭০২. ৩২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০.২৫ মিটার এই সেতু ও সড়ক পারাপারে সময় রাখা হয়নি ন্যূনতম নিরাপত্তা ব্যবস্থা। লাইটিং সচল না হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় চলাচল করতে হচ্ছে সেতু পারাপারকারীদের।
সেতুর উত্তর প্রান্তের গন্ধর্ব্বপুর গ্রামের বাসিন্দা হাজী আখলই জানান, সেতু চালু হওয়া তারা আশায় বুক বেঁধে ছিলেন। কিন্তু উদ্বোধনের পরপর লাইট না থাকায় তারা আশাহত হয়ে পড়েছেন। সেতু ও চলাচলকারীদের নিরাপত্তায় সেতুর দুই প্রান্তে ২টি পুলিশ বক্স স্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে। তাছাড়া সেতুতে কোনো যানবাহন বা মানুষ যাতে না দাঁড়াতে পাড়ে সে দিকেও প্রশাসনকে নজর দিতে হবে।
সেতুর দক্ষিণ প্রান্তের আলমপুর গ্রামের বাসিন্দা মনজু মিয়া ক্ষোভ নিয়ে অভিযোগ করেন, সন্ধ্যার পর অন্ধকারে মানুষ নিরাপত্তহীনতার মধ্যে দিয়ে আসা যাওয়া করছে। এরপর রয়েছে চুরি সহ নানান অপরাধ হওয়ার সম্ভবনা। প্রশাসনের নজরদারির অভাব ও উদাসীনতায় এসব ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প ও লাইটিং ব্যবস্থা দ্রুত সচল প্রয়োজন।
ল্যাম্পপোষ্টের দায়িত্বে থাকা রানীগঞ্জ বাজারের বাসিন্দা মো. জমিরুল মিয়া বলেন, রানীগঞ্জ সেতুর লাইটের দায়িত্বে আমি আছি। এই লাইট গুলো এমএম বিল্ডার্স এ কাজ করার কথা এখনো তারা করে নাই। সট সার্কিট থেকে লাইটে সমস্যা হয়েছে। সুইচ দিয়ে আগুন লেখে যায়। এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী স্যার ভাল বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগ সওজ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ বলেন, হ্যা রানীগঞ্জ সেতুতে দীর্ঘদিন ধরে ল্যাম্পপোষ্ট গুলো জ্বলছে না। অচিরেই এই ল্যাম্পপোষ্ট গুলো মেরামত করা হবে। মেরামতের জন্য বরাদ্ধ দেওয়া হবে।