নানা আয়োজনে শ্রীমঙ্গলে চা–বাগানের ঐতিহ্যবাহী করম উৎসব
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের কাকিয়াছড়া এলাকায় ঐতিহ্যবাহী করম উৎসব নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উৎসবের অংশ হিসেবে বাঁশের ঝুড়িতে ধান, গম, ভুট্টাসহ বিভিন্ন শস্যের গজানো বীজ সাজানো হয়। এক পাশে রাখা ছিল করম গাছের ডাল। পরে নারী-পুরুষ সেই ডাল হাতে তুলে নেন। তরুণীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাকে ঝুড়ি মাথায় তুলে নিলে ঢোল-করতালের তালে শুরু হয় নৃত্য-গান। শোভাযাত্রা ঘুরে পৌঁছে যায় মাঠের প্যান্ডেলে, যেখানে সাজানো বেদির চারপাশে ঝুড়ি রেখে শুরু হয় পূজা-আচার।
রোববার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলা এ আয়োজনে বাড়াইক, মুণ্ডা, কুর্মি, খাড়িয়া, ভূঁইয়া, মুসহর, উরাং, তাঁতি, ভূমিজ, সাঁওতাল, খেডোয়ার, তুরি, কন্দ, তেলী, লোহার, বাগদি, শবরসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষ অংশ নেন। তাঁরা ধর্মীয় আচার, গান ও নাচে মেতে ওঠেন।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি পংকজ কন্দ জানান, চা–বাগানের প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর আলাদা আলাদা উৎসব রয়েছে। তবে করম উৎসবকে কেন্দ্র করে সবাই আনন্দে একত্রিত হন। জীবনের কষ্টের মাঝেও এভাবেই তাঁরা উৎসবের আনন্দ খুঁজে পান।
উৎসব উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক লক্ষণ মুণ্ডা বলেন, ভাদ্রের শেষ আর আশ্বিনের শুরুতে প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী করম উৎসব পালন করা হয়। গাছ দেবতার প্রতি প্রার্থনা জানিয়ে তরুণ-তরুণীরা গান-নাচে অংশ নেন। ফসল, উর্বরতা ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক হিসেবেই এ উৎসবকে মানা হয়।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসলাম উদ্দিন জানান, শ্রীমঙ্গলে সরকারি গেজেটে অন্তর্ভুক্ত ২৬টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী বসবাস করছে। তাঁদের প্রতিটি উৎসবকে টিকিয়ে রাখতে উপজেলা প্রশাসন সহযোগিতা করে আসছে।