নড়াইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জাল স্বাক্ষরের অভিযোগ
নড়াইলের হবখালী হামিদুনেচ্ছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু ছামীন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে সহকারী শিক্ষিকা ঝুমা রানী বোসকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও হাজিরা খাতায় জাল স্বাক্ষর করানোর অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষক এম এম আছাদুজ্জামান গত ৩ আগস্ট অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়, ঝুমা রানী বোস দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা গ্রহণ করছেন। প্রধান শিক্ষক আবু ছামীন বিশ্বাস প্রায় এক বছর ধরে তাকে চিকিৎসাজনিত ছুটি অনুমোদন দিয়ে আসছেন। অভিযোগ রয়েছে, মাঝে মাঝে ঝুমা রানীর স্বামী অমল কুমার নাগ বিদ্যালয়ে এসে তার হয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। সর্বশেষ ২৭ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত অনুপস্থিত থেকেও তিনি হাজিরা দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক প্রতিনিধি কাজী ইমদাদুর রহমান বলেন, “আমরা নতুন কমিটি গঠনের পর থেকে ঝুমা রানীকে বিদ্যালয়ে দেখি নাই। বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনি নিয়ম অনুযায়ী ছুটিতে আছেন।”
ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জানায়, ঝুমা ম্যাডামকে তারা ছয়-সাত মাস ধরে বিদ্যালয়ে দেখতে পায়নি। সবাই বলছে, তিনি নাকি ছুটিতে আছেন।
একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন। কেউ যদি তার অনুকূলে না থাকেন, তবে সামান্য অনুপস্থিতিতেও তাদের বেতন কেটে নেওয়া হয়। অথচ ঝুমা রানী বোসকে দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ সুবিধা দিয়ে আসছেন।
অভিযোগকারী শিক্ষক এম এম আছাদুজ্জামান বলেন, “প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতা ও দ্বিচারিতার কারণে বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঝুমা রানী দীর্ঘদিন ছুটিতে থাকলেও বিভিন্ন সময়ে হাজিরা খাতায় তার নামে স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে।”
ঝুমা রানী বোসের সাথে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
অন্যদিকে প্রধান শিক্ষক আবু ছামীন বিশ্বাস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “মানবিক কারণে এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পরামর্শে ঝুমা রানী বোসকে স্বাক্ষর করানো হয়েছে।”
তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন এ বিষয়ে বলেন, “প্রধান শিক্ষক আমার কাছে এসেছিলেন। আমি তাকে বলেছি ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে আলোচনা করতে।”