সিলেটের কারা ব্যবস্থাপনায় নতুন দিগন্ত, সাফল্যের প্রতিচ্ছবি বাদাঘাট কেন্দ্রীয় কারাগার।
সিলেটের কারা ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হয়েছে নতুন এক অধ্যায়। বন্দিদের জন্য উন্নত সুযোগ-সুবিধা ও আধুনিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে সিলেটের বাদাঘাট এলাকায় নির্মিত হয়েছে কেন্দ্রীয় কারাগার-১। সম্প্রতি সেখানে অনুষ্ঠিত হয়েছে মিনিবার প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান, যা কারাগার ব্যবস্থাপনায় এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।
গত সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিআইজি প্রিজন্স মোহাম্মদ ছগির মিয়া। তিনি বলেন, “সিলেটের শান্তিপ্রিয়, ন্যায়নিষ্ঠ এবং উন্নয়নমুখী জনগণের সহযোগিতায় এই আধুনিক কারাগার বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। মেট্রোপলিটন এলাকার বন্দিদের জন্য আলাদা একটি কেন্দ্রীয় কারাগার সিলেটবাসীর বহুদিনের দাবি ছিল, তা পূরণ হওয়ায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”
ডিআইজি আরও বলেন, “সরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সিলেটবাসীর সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রশংসনীয়। এখানকার কারাগারগুলোর উন্নয়নে স্থানীয় মানুষের অবদান অনস্বীকার্য। এমনকি বন্দিরাও নিজেদের আচরণে শৃঙ্খলাপরায়ণতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।”
তিনি বলেন, “শরীর ও মন দুটোকেই সুস্থ রাখতে শরীরচর্চা এবং খেলাধুলার বিকল্প নেই। নিয়মিত জামাতে নামাজ আদায়ের পাশাপাশি একজন মুসলমান হিসেবে শরীর সচল রাখার গুরুত্ব অপরিসীম।”
‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’-এর অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এর ফটকের পাশে মাঠে এই খেলার আয়োজন করা হয়, যা বন্দিদের মাঝে উদ্দীপনা ছড়িয়েছে। বৈরী আবহাওয়া থাকা সত্ত্বেও পুরো আয়োজন সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এর সিনিয়র জেল সুপার নাহিদা পারভীন, কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক এবং সিলেট বিভাগীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের সহ-সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এমদাদুর রহমান চৌধুরী জিয়া।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন জেলার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, ডেপুটি জেলার শামীমা নাসরিন তানিয়া ও মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বে ছিলেন কারারক্ষী শাহ আলম এবং সহকর্মী শাহ পরান, সারোয়ার, সুজন, শফিকুর রহমান, সোহেল রানা, সইদুল ইসলাম, প্রদীপ দাসসহ অনেকে।
মিনিবার ফুটবল লিগের ফাইনালে ইউনাইটেড ক্লাব ২-০ ব্যবধানে উদীয়মান ক্লাবকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ইউনাইটেড ক্লাবের অধিনায়ক শাহ আলমের হাতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি এবং উদীয়মান ক্লাবের অধিনায়ক কিবরিয়ার হাতে রানারআপ ট্রফি তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের মাঝে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। আয়োজনে অংশগ্রহণকারী অতিথিরা কারা প্রশাসনের এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে প্রশংসা করে বলেন, এটি সিলেট অঞ্চলের কারা ব্যবস্থাপনাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।