রাজিবপুরে বাঁশের সাঁকোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার !
রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের মদনপাড়া গ্রামে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছে ৪ গ্রামের কয়েকশত মানুষ।
এলাকার একমাত্র সংযোগ সড়কটি গত ব্ন্যায় ভেঙ্গে যাওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরে। স্থানীয়রা বাধ্য হয়ে একটি অস্থায়ী বাঁশের সেতু তৈরি করে পারাপার হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে মদনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মদনপাড়া, মোহনগঞ্জ, মধ্য মদন পাড়া ও দক্ষিণপাড়ার লোকজন এই রাস্তা দিয়েই প্রতিদিন হাট-বাজার, স্কুল, কলেজসহ নিত্যপ্রয়োজনে চলাফেরা করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা ও কালভার্টটি ভেঙে যায়।ফলে চলাচলের একমাত্র ভরসা এখন একটি বাঁশের সেতু। বর্ষা মৌসুমে এই পথ আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। একটু অসতর্ক হলেই ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। রাস্তার মাঝে বেশি গভীর হওয়ায়, রাস্তার এক পাশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে সাঁকোটি।
মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের বিশিষ্ট সমাজসেবক ও সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন আনু বলেন,
“আমরা নিজেরাও কয়েকদিন আগে ঐ বাঁশের সেতু দিয়ে পার হয়েছি। সত্যি বলতে কি, সাঁকো টি মরণ ফাদঁ। দেখেছি ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন স্কুলে যেতে কতটা ঝুঁকি নেয়। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই-অতি দ্রুত এই রাস্তা সংস্কার করে জনগণের জন্য নিরাপদ চলাচলের ব্যবস্থা করা হোক।”
অভিযোগ করে এলাকাবাসী বলেন,
“আমরা বারবার ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের জানিয়েছি, কিন্তু তারা কোনো উদ্যোগ নেননি। শিশুরা স্কুলে যেতে পারে না, অসুস্থ রোগীকে নেওয়াসহ নিত্য দিনের সমস্যা এটি।
মদনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহামম্মদ আলী জিন্নাহ ও আয়নাল হক বলেন,
“রাস্তার এই দুরবস্থার কারণে আমাদের স্কুলের উপস্থিতির হার অনেক কমে গেছে। অভিভাবকেরা শিশুদের ঝুঁকি নিয়ে পাঠাতে ভয় পান। বিশেষ করে বর্ষা এলে সেতুটি পিচ্ছিল হয়ে পড়ে, তখন অনেক সময় স্কুলে আসা-যাওয়াই বন্ধ হয়ে যায়। আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি, দ্রুত রাস্তাটিতে উন্নয়নমূলক কাজ করে শিক্ষার্থীদের নিরাপদে স্কুলে আসার সুযোগ নিশ্চিত করা হোক।”
এলাকার সাধারণ মানুষ বলেন,
“এই রাস্তা আমাদের জীবনের অংশ। প্রতিদিন কত মানুষ এখানে পড়ে যায়, কেউ আহত হয়-কিন্তু তবুও কেউ দেখার নেই। আমরা শুধু চাই, সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করুক। যেন আমাদের সন্তানরা নিরাপদে স্কুলে যেতে পারে।”
স্থানীয়দের মতে, মদনপাড়ার এই বাঁশের সেতুটি যেন এখন এলাকার মানুষের দুর্ভোগের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিনের অবহেলা ও উন্নয়নের অভাবে গ্রামের মানুষ আজ চরম ভোগান্তিতে। তারা আশা করছেন-প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপে এই দুর্ভোগের অবসান ঘটবে, নিরাপদ পথে ফিরবে মদনপাড়ার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
চলাচলের উপযোগী রাস্তা নির্মাণই এখন মদনপাড়াবাসীর একমাত্র দাবি।
আতাউর রহমান
০১৭১৬৩৪৩০৯৩