হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলন বাংলাবাজার ইউনিয়ন শাখার আহ্বায়ক কমিটি গঠন
হাওর ও নদী বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ ও জনজীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মাছ, ধান, জলজ উদ্ভিদসহ কৃষি ও জীববৈচিত্র্য সরাসরি হাওরের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু দখল, দূষণ, অবৈধ বালু উত্তোলনসহ নানা কারণে এই সম্পদ আজ বিপন্ন।
এ বাস্তবতা সামনে রেখে তরুণদের সম্পৃক্ত করে মাঠপর্যায়ে কাজ এগিয়ে নিতে গঠিত হয়েছে হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলা উপজেলা বিভিন্ন শাখা কমিটি।
এরই ধারাবাহিকতায় সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়ন শাখার আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১০অক্টোবর) বিকালে বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে এক সম্মেলনের মাধ্যমে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলন দোয়ারাবাজার উপজেলা আহবায়ক কমিটির আহবায়ক নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব মুফতি আবু তাহের মিসবাহ।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুগ্ম আহবায়ক হুসাইন মুহাম্মদ এমরাজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুগ্ম আহবায়ক কাজ্বী ইউসুফ, সদস্য হাফেজ মুজাহিদুল ইসলাম, তাজ উদ্দিন আহমেদ বক্তারা বলেন—“হাওর শুধু পানির ভাণ্ডার নয়, এটি আমাদের জীবিকা, সংস্কৃতি ও অস্তিত্বের অংশ।
অবৈধ বালু উত্তোলন ও নদী দখলের কারণে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে। এ অন্যায় রোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
“ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে স্বচ্ছতা জরুরি। হাওরকে কেন্দ্র করে টেকসই পর্যটনের সুযোগ আছে, তবে পরিবেশ সংরক্ষণকে সর্বাগ্রে রাখতে হবে।”
সম্মেলনে একটি ৩ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়।
তাদের তত্ত্বাবধানে ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে তরুণদের অংশগ্রহণে ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়।
কমিটিতে ছাত্রনেতা শিব্বির আহমেদকে আহবায়ক ও আমজাদ হোসেন রায়হান ও জাহাঙ্গীর হোসেনকে যুগ্ম আহবায়ক এবং মাওলানা আল আমিন আহমেদকে সদস্য সচিব হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিন মাসের জন্য এ কমিটি দায়িত্ব পালন করবে।
অন্যান্য সদস্যরা হলেন— মাওলানা মাহমুদুল হাসানা, মোস্তাক আহমেদ, ফজলুর রহমাম, দুলাল মিয়া, হাফিজ আলী, তারেক গাজী, ওমর ফারুক, আব্দুল্লাহ, রাসেল মিয়া, সিয়াম আহমেদ।
সম্মেলনে কৃষক-শ্রমিকসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেন।
কমিটি ঘোষণার পর উপজেলা যুগ্ম আহ্বায়ক হুসাইন মুহাম্মদ এমরাজ নবনির্বাচিত সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান।
শপথে তারা হাওর ও নদী রক্ষায় সর্বাত্মক ভূমিকা রাখার প্রতিজ্ঞা করেন এবং সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এই কমিটি গঠনের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে হাওর ও নদী রক্ষার লড়াই আরও শক্তিশালী হলো। পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা মনে করেন, এ ধরনের তৃণমূল উদ্যোগ হাওর অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন, কৃষি সুরক্ষা ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখবে।