সিলেটে ড. মাহমুদুর রহমানের বক্তব্য
বাংলাদেশের বামপন্থীরা ঐতিহাসিকভাবে ভারতের স্বার্থ রক্ষা করে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিক আমার দেশ-এর সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। তার ভাষ্যে, ১৯৪৭ সাল থেকেই এ অঞ্চলের বাম রাজনীতিকরা বাঙালি মুসলমানদের স্বার্থের বিপক্ষে কাজ করেছে এবং এখনো সেই প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স আয়োজিত “সিলেট গণভোট ও মুসলিম ভৌগোলিক জাতীয়তাবাদ” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ইতিহাস চর্চার আহ্বান
ড. মাহমুদুর রহমান বলেন,
“স্বাধীনতাকে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখতে হলে সাংস্কৃতিক বিজয় অর্জন অপরিহার্য। স্বাধীনতার পর থেকেই সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চলছে। এর মোকাবিলা সম্ভব কেবল ইতিহাস চর্চার মাধ্যমে।”
তিনি তরুণ প্রজন্মকে ইতিহাসের গভীরে প্রবেশ করে সঠিকভাবে অতীতকে জানার পরামর্শ দেন। তার মতে, নিজেদের পরিচয় রক্ষায় ইতিহাস অধ্যয়ন অপরিহার্য।
পাকিস্তান ও সিলেটের প্রসঙ্গ
তিনি বলেন, “সিলেটবাসী গণভোটের মাধ্যমে পাকিস্তানের অংশ হয়েছিল, আর সেটিই ছিল স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম ধাপ। পাকিস্তানে যোগ না দিলে বাংলাদেশের স্বাধীনতাও সম্ভব হতো না।”
ভারতের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য
ড. মাহমুদুর রহমান অভিযোগ করেন, বিভাজনের সময় ভারত গুরদাসপুর ও করিমগঞ্জ পাকিস্তানকে না দিয়ে অন্যায় করেছে। তার মতে, এ কারণে কাশ্মীরের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হয়।
অন্যান্য মন্তব্য
তিনি দাবি করেন, স্বদেশী আন্দোলন ছিল মুসলমানদের স্বার্থবিরোধী।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আমার সোনার বাংলা রচনা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন এবং অভিযোগ করেন কলকাতাকেন্দ্রিক অভিজাতরা মুসলমানদের সংস্কৃতির ওপর নিজেদের প্রভাব চাপিয়ে দিয়েছে।
তিনি মনে করেন, বাংলা নামের ভূখণ্ডের ঐক্য মুসলিম শাসক শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহের হাতেই গড়ে উঠেছিল।
অনুষ্ঠানে উপস্থিতরা
গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর মোহাম্মদ আবু তাহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন লেখক ও গবেষক ডা. ফাহমিদ-উর-রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ লে. কর্নেল সৈয়দ আলী আহমদ, অধ্যাপক ড. রাবেয়া খাতুনসহ শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশার মানুষ।
অনুষ্ঠানে কায় কাউস রচিত “ঐতিহাসিক সিলেট গণভোট: পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্তির সংগ্রাম” বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।