ময়মনসিংহে ‘স্বাধীনতা’ প্রকল্পের আওতায়
“ডিজিটাল গণতন্ত্রের জন্য মতপ্রকাশের স্বাধীনতা”—
ডিজিটাল নিরাপত্তা ও তথ্য যাচাই দক্ষতা বৃদ্ধি বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
মমতা বেগম পপি , ময়মনসিংহ :
তরুণ সাংবাদিক, কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও মানবাধিকার কর্মীদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষা, ভ্রান্ত ও বিভ্রান্তিকর তথ্য মোকাবিলা এবং অনলাইন নিরাপত্তাবিষয়ক দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী বিশেষ কর্মশালা।
২১–২২ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে নগরীর বাইপাস এলাকার শাপলা ট্রেনিং সেন্টারে আয়োজিত এই কর্মশালা পরিচালনা করে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। স্থানীয় পর্যায়ে বাস্তবায়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে পরিবর্তন উন্নয়ন সংস্থা, ময়মনসিংহ বিভাগ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে বাস্তবায়িত ‘স্বাধীনতা’ প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রশিক্ষণটি আয়োজন করা হয়।
দুই দিনের সেশনজুড়ে অংশগ্রহণকারীরা ডিজিটাল নিরাপত্তা, নৈতিক সাংবাদিকতা, তথ্য যাচাই (ফ্যাক্টচেকিং), ভুয়া সংবাদ শনাক্তকরণ, অনলাইন হয়রানি প্রতিরোধ এবং আধুনিক ডিজিটাল সাংবাদিকতার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে হাতে–কলমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন-এর মনিটরিং অফিসার ও প্রশিক্ষক ফৌজিলাতুন্নেছা বাস্তব উদাহরণ তুলে ধরে দেখান—ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য কীভাবে সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে।
পরিবর্তন উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক নারগিস আক্তার বলেন, “তথ্যপ্রবাহ সঠিক ও নির্ভরযোগ্য না হলে গণতান্ত্রিক সমাজ দুর্বল হয়ে পড়ে। তরুণ সাংবাদিক, কনটেন্ট নির্মাতা ও অ্যাক্টিভিস্টদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ছাড়া ডিজিটাল নাগরিকত্ব শক্তিশালী করা সম্ভব নয়। ‘স্বাধীনতা’ প্রকল্পের লক্ষ্যই হলো—ডিজিটাল স্পেসে নিরাপদ, সচেতন ও দায়িত্বশীল অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।”
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী তরুণ সাংবাদিক মারফুয়া আক্তার জানান,
“ভুয়া সংবাদ কত দ্রুত ছড়িয়ে সমাজে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে—এ প্রশিক্ষণে এসে তা আরও স্পষ্টভাবে বুঝেছি। তথ্য যাচাইয়ের দক্ষতা মাঠপর্যায়ের প্রতিবেদনে আমাদের আরও কার্যকর করবে।”
কনটেন্ট ক্রিয়েটর পূজা দেবনাথ বলেন,
“অনলাইন হয়রানি প্রতিরোধে আগে তেমন ধারণা ছিল না। এখন নিজের নিরাপত্তা বজায় রেখে দায়িত্বশীলভাবে কাজ করার বাস্তবমুখী কৌশল শিখেছি।”
ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে তরুণ সাংবাদিক, ডিজিটাল কনটেন্ট নির্মাতা, অ্যাক্টিভিস্ট ও মানবাধিকার কর্মীরা কর্মশালায় অংশ নেন। প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রিতা আক্তার, ইলিয়াস আহম্মেদ ও কল্পনা প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন মার্জিনা আক্তার বর্ষা।
প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়।
আয়োজকরা জানান, ডিজিটাল যুগে তথ্যসচেতনতা বৃদ্ধি এবং নিরাপদ মতপ্রকাশ নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতেও অনুরূপ প্রশিক্ষণ অব্যাহত থাকবে। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ আগামী দিনগুলোতে ডিজিটাল নাগরিকত্ব, তথ্যসংস্কৃতি ও অনলাইন নিরাপত্তা বিষয়ে আরও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি হাতে নিচ্ছে।