সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলার উত্তরশ্রীপুর ইউনিয়নের কামালপুর নামকস্থানে বিআইডব্লিউটি এ কর্তৃক পাটলাই নদীতে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে দুই বছরের জন্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয় থেকে আড়াই কোটি টাকায় ইজারা গ্রহন করেন মেসার্স সোহাগ এন্টাইপ্রাইজ।
শুরু থেকে ইজারাদারের পক্ষে ঘাটের ম্যানেজার লোকমান হোসেন ও সহকারী ম্যানেজার অনিক মিয়া কয়লা ও পাথর পরিবহনকারী প্রতিটি ভলগেট নৌকা হতে সরকারের নির্ধারিত প্রতিটনে ৩৪.৫০ পয়সা হারে টোল আদায় করে আসছিলেন।
কিন্ত ২০২৪ সালের ৫ই আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতা ফেরদৌস আলমের সহযোগিতায় উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও তরঙ্গ গ্রামের বিএনপি নেতা দিলোয়ার হোসেন তালুকদারের নেতৃত্বে একই গ্রামের জিয়াউর রহমান আখঞ্জী, ইসলাম হোসেন আখঞ্জী ও কবির হোসেন গংরা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কামালপুর বিআইডব্লিউটি এ ঘাটে আসেন এবং ঘাটের ৬ আনা শেয়ার হোল্ডার নিতে ঘাটের ইজারাদার মেসার্স সোহাগ এন্টার প্রাইজের সত্বাধিকারী বিএনপি নেতা মোঃ রতন মিয়ার নিকট ঘাটের শেয়ার দাবি করেন।
পরবর্তীতে ৬ আনার হিসেব মোতাবেক ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার নামাংঙ্কিত ব্যাক্তিরা ১৮ লাখ দিয়ে জোরপূর্বক শেয়ার গ্রহন করেন। এভাবে চলতে থাকে ঘাটে টোল আদায়ের কার্যক্রম। কিন্ত গত ২৮ জুন সন্ধ্যায় উত্তর শ্রীপুর ইউপি সদস্য ও তরঙ্গ গ্রামের দিলোয়ার হোসেন তালুকদার, জিয়াউর রহমান আখঞ্জী, ইসলাম হোসেন আখঞ্জী ও কবির হোসেন ঘাটে এসে ম্যানেজারের নিকট রক্ষিত গত ২৬ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত তিনদিনের টোল আদায়ের কালেকশন তিনলাখ ৫১ হাজার ৬০০ শত টাকা জোরপূর্বক নিয়ে যান এবং ঘাটের মেসার্স সোহাগ এন্টারপ্রাইজের নিয়োগকৃত লোকমান হোসেন ও সহকারী ম্যানেজার অনিক মিয়াকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘাট ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দামকী দিয়ে বিদায় করে ঘাটের দখল পজিশন তারা গ্রহন করেন।
এই কামালপুর ঘাটের ইজারার মেয়াদ চলতি জুন মাসের ৩০ তারিখে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্ত এর আগেই বিএনপি নামধারী নামাংঙ্কিত দিলোয়ার হোসেন তালুকদারের নেতৃত্বে প্রভাবশালী চক্রটি গত তিনদিন ধরে প্রকৃত ইজারাদারের লোকজনকে জোর পূর্বক সরিয়ে দিয়ে সরকারের নির্ধারিত কয়লা ও পাথর পরিবহনকৃত ছোট বড় প্রতি ভলগেট নৌকা থেকে যেকানে ৩৪.৫০ পয়সা হারে টোল আদায় করার কথা সেখানে তারা প্রতিটি ভলগেট নৌকা থেকে প্রতিটনে প্রায় দিগুন ৫০.৫০ পয়সা হারে চাদাঁ আদায় করছেন বলে সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করেন মেসার্স সোহাগ এন্টার প্রাইজের মাধ্যমে ইজারাদারের নিয়োগকৃত ম্যানেজার লোকমান হোসেন ও অনিক মিয়া।
তারা বলেন গত ২৮ জুন সন্ধ্যায় ঘাটের তিনদিনের টোল আদায়ের জমাকৃত টাকা উত্তরশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বিএনপি নেতা দিলোয়ার হোসেন তালুকদার, জিয়াউর রহমান আখঞ্জী, ইসলাম হোসেন আখঞ্জী ও কবির হোসেন গং ঘাটে এসে জোরপূর্বক তিনলাখ ৫১ হাজার ৬০০ শত টাকা ছিনিয়ে নিয়ে আমাদেরকে ভলভীতি দেখিয়ে ঘাট থেকে বিতারিত করেন। আমরা এমন চাঁদাবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান। তারা দলের নাম ভাঙ্গিয়ে এমন অনৈতিক কার্যকলাপে আমরা হতাশ।
এ ব্যাপারে উত্তর শ্রীপুর ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা দিলোয়ার হোসেন তালুকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে নৌ-মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে বিআইডব্লিউটি এ কর্তৃক তাহিরপুরের কামালপুর পাটলাই নদী ঘাটের ইজারাদার সোহাগ এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী বিএনপি নেতা মোঃ রতন মিয়া জানান, বিএনপি নামধারী দিলোয়ার হোসেন, জিয়াউর রহমান, কবির মিয়াগংরা গত ৫ই আগষ্ট পটপরিবতর্নের পর কামালপুর বিআইডব্লিউটি এ ঘাট থেকে জেটি জোরপূর্বক নিয়ে যান। পরবর্ততে তৎকালীন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে আমি ইজারাদার হিসেবে আমার লোকজন এবং বিএনপি নামধারী উত্তর শ্রীপুর ইউপি সদস্য দিলোয়ার জিয়াউর ও কবির হোসেন গংরা উপজেলা পরিষদের বসা হয়। তখন বিএনপি নামধারী দিলোয়ার গংরা ঐ ঘাটের শেয়ার নিতে মত প্রকাশ করলে তাদেরকে ৬ আনা শেয়ার ৮৪ লাখ টাকা সাব্যস্থে প্রথম ১৮ লাখ টাকা দিয়ে তারা শেয়ার গ্রহন করেন এবং মিলেমিশে ব্যবসা করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার মতামত দেন। পরবর্তীতে ছয়আনা শেয়ার নেয়া দিলোয়ার হোসেন গংরা বাকি শেয়ারের ৬৬ লাখ টাকা দিবেন বলে অঙ্গীকার করেন। কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে তারা আমার নিকট হতে ছয়আনা হারে ব্যবসায়ী সুবিধা নিলেও শেয়ারের ৬৬ লাখ টাকা এখনো দেননি বরং গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দিলোয়ার হোসেন, জিয়াউর রহমান ও কবির মিয়া গংরা কামালপুর পাটলাই নদী ঘাটে গিয়ে আমার ম্যানেজার লোকমান হোসেন ও অনিক মিয়া কর্তৃক তিনদিনের টোল আদায়ের তিন লাখ ৫১ হাজার ৬০০ টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে ম্যানেজারদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘাট থেকে উচ্ছেদ করে তারা অবৈধভাবে জোরপূর্বক ঘাটের দখল নিয়ে নেন। তিনি এই সমস্ত দখলবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানান।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটি এ এর সিলেট সুনামগঞ্জ অঞ্চলের উপ-পরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, কোন বৈধ ইজারাদারকে জোরপূর্বক সরিয়ে কোন পক্ষ জবর দখল একটা ফৌজধারী অপরাধ। তবে সোহাস এন্টাইপ্রাইজের পক্ষ থেকে আমি এমন কোন অভিযোগ পাইনি।