মাদ্রাসা থেকে ১৩ বছরের শিক্ষার্থী নিখোঁজ: শারীরিক নির্যাতন ও গুমের অভিযোগ পরিবারের
কক্সবাজারে জামেয়াতুল ইমাম মুসলিম (রা.) মাদ্রাসা ও এতিম খানার ১৩ বছর বয়সী আবাসিক ছাত্রী সাদিয়া সুলতানা মরিয়ম নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সুপারসহ দুই শিক্ষককে দায়ী করে শারীরিক নির্যাতন, গুম ও পাচারের অভিযোগ তুলেছেন ভিকটিমের মা মোসা. রিনা আক্তার। গত ২৫ নভেম্বর এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী রিনা আক্তার জানান, ২৫ নভেম্বর সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে ০১৮৮৪-৭৬৯৪৬২ নম্বর থেকে তাকে ফোন করে বলা হয়—তার মেয়ে সাদিয়াকে টাকা চুরির অভিযোগে মারধর করা হয়েছে এবং এ ঘটনার পর সে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে গেছে। খবর পেয়ে তিনি দ্রুত মাদ্রাসায় যান। সেখানে ছাত্র–ছাত্রীদের মাধ্যমে জানতে পারেন, দ্বিতীয় আসামি সাদিয়াকে বেদম মারধর করেন এবং চুরি হওয়া টাকা ফেরত না দিলে মাথার চুল কেটে ফেলার হুমকি দেন।
অভিযোগ রয়েছে, মেয়েকে খুঁজতে হোস্টেলে ঢুকতে চাইলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাকে প্রবেশ করতে দেয়নি। মেয়ের কোনো খোঁজ না পেয়ে রিনা আক্তার সেদিনই কক্সবাজার মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং—২০১৪) করেন। বিষয়টি এসআই অজিদ কুমার দাশ তদন্ত করছেন।
এরপরের কয়েকদিন তিনি মাদ্রাসার আশপাশের এলাকায় মাইকিং করাসহ বিভিন্ন সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করলেও কোনো সন্ধান পাননি। এদিকে অজ্ঞাত একটি নম্বর থেকে এক প্রতারক চক্র ফোন করে দাবি করে—সাদিয়া তাদের কাছে আছে, ৫০ হাজার টাকা দিলে ছেড়ে দেবে। বিষয়টি র্যাব-১৫ কে জানানো হলে টানা অভিযান চালিয়ে ওই প্রতারক চক্রকে আটক করে র্যাব। তবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তাদের কাছে সাদিয়া নেই।
মেয়ের কোনো খোঁজ না পেয়ে দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়েছেন মা রিনা আক্তার। তিনি বলেন,
“আমার ধারণা, মাদ্রাসার লোকজন আমার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করে লাশ গুম করেছে, অথবা পাচার করেছে। এ মাদ্রাসা নিয়ে আগেও নানা অপকর্মের অভিযোগ শুনেছি। স্থানীয়রাও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নেতিবাচক কথা বলে।”
এ ঘটনার পর স্থানীয় এলাকায় চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভিকটিমের পরিবার দ্রুত মেয়েকে জীবিত ফিরে পাওয়ার জন্য প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।