বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

রাম্বুটান বাণিজ্যিক চাষে ভালুকায় ব্যাপক ফলন, স্বাদ লিচুর মতোই

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ময়মনসিংহ
  • আপডেটের সময়: বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫
  • ১৪ সময় দেখুন
রাম্বুটান বাণিজ্যিক চাষে ভালুকায় ব্যাপক ফলন, স্বাদ লিচুর মতোই
রাম্বুটান বাণিজ্যিক চাষে ভালুকায় ব্যাপক ফলন, স্বাদ লিচুর মতোই

ময়মনসিংহে রাম্বুটানের বাণিজ্যিক চাষে ব্যাপক ফলন হয়েছে। লিচুর মতোই স্বাদে ভরপুর এই রাম্বুটান ফল। ওষুধি ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বিদেশি ফল রামবুটানের বাণিজ্যিক চাষ হচ্ছে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে জনপ্রিয় এই ফল।

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বিরুনিয়া ইউনিয়নের গোয়ারী গ্রামে বছর পাঁচেক আগে ব্যবসা ও শিক্ষকতার পাশাপাশি ৬ একর জমি লিজ নিয়ে ফলের বাগান করে গ্রামের মাটিতে বিদেশি ফল রাম্বুটান চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন চাচা-ভাতিজা শেখ মামুন ও আশরাফ উদ্দিন শুভ মানের ওই দুই ব্যাক্তি। রাম্বুটান দেখতে ডিম্বাকৃতি, খোসা নরম কাঁটাযুক্ত। পাকা ফল উজ্জ্বল লাল, কমলা বা হলুদ রঙের হয়ে থাকে। পুরু খোসা ভেতরে সাদা শ্বাস। যা খেতে ও দেখতে লিচুর মতোই।

জুলাই-আগস্ট মাসে ফল পাকে। অপুষ্ট ফলের রং সবুজ থাকে। প্রায় সব ধরনের মাটিতে এ ফল চাষ করা যায়। তবে পানি সেচ ও নিষ্কাশন সুবিধাযুক্ত উর্বর দো-আঁশ মাটি এ ফল চাষের জন্য বেশি উপযোগী।
ফলটি দেখতে অনেকটা ভেরেন্ডা ফলের মতো। ভেরেন্ডা ফল গ্রামে গঞ্জে প্রচুর ফলে। গাঢ় সবুজ রঙের ভেরেন্ডা বীজের বহিরা-বরণে থাকে নরম কাঁটা আর সবুজ খোসাযুক্ত এই ভেরেন্ডা বীজের সাথে রাম্বুটানের কিছুটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়। অত্যন্ত সুস্বাদু ও সুমিষ্ট এ ফলটি পাকলে সবুজাভ হলদে রঙ ধারণ করে। প্রজাতি ভেদে হালকা লাল, বাদামী এমনকি কালচে রঙের রাম্বুটানও দেখা যায়। ফলের খোসায় নরম কাঁটার মতো লোম/চুল থাকায় আমাদের দেশে অনেকে একে ‘দাঁড়িওয়ালা লিচু’ ডাকে।

জানা যায়, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া হচ্ছে রাম্বুটানের আদি নিবাস। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশে প্রচুর পরিমাণে জন্মালেও বাংলাদেশে আগে পাওয়া যেত না। বাংলাদেশে এখন কেউ কেউ রাম্বুটানের গাছ লাগাচ্ছেন। বেশ চড়াদামে মাঝে মাঝে ঢাকার বড় বড় বাজারে বা মার্কেটে রাম্বুটান পাওয়া যায়। তবে এখানকার সুপার মার্কেটেও এটা কম দামে পাওয়া যায় না।

সারা পৃথিবীতে বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ মে.টন রাম্বুটান উৎপাদিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে থাইল্যান্ড একাই করে ৫৫% বা ৫.৮৮ লক্ষ টন। এরপর ইন্দোনেশিয়া ৩.২০ লাখ ম টন, মালয়েশিয়ায় ১ লাখ ২৬ হাজার টন রাম্বুটান উৎপাদিত হয়। এছাড়া কোস্টারিকা, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, ভারত, শ্রীলংকা, হন্ডুরাস, ক্যারাবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশে রাম্বুটান উৎপাদিত হয়।

রাম্বুটান চাষি শেখ মামুন বলেন, নিরক্ষীয় অঞ্চলের দেশ সমূহ যেখানে সারা বছরই গরম থাকে সেই সব দেশে রাম্বুটান ভালো ফলে । বাংলাদেশের আবহাওয়া রাম্বুটান চাষের. উপযোগী। কেউ কেউ চাষ. শুরু করেছেন। আমার মনে হয়. বাংলাদেশের সার্বিক পরিবেশ রাম্বুটান চাষের জন্য খুবই. উপযোগী। এদেশে রাম্বুটান চাষ করা হলে লিচুর সাথে বাড়তি লিচুর কাজিন খেতে পারবে বাংলাদেশের মানুষেরা।

জোলা কৃষি অফিস কর্তৃপক্ষ বলছে, ফলটির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশে এবং দেশের বাইরে। এ ফল বাজারে আকার ভেদে কেজি প্রতি এক হাজার থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাম্বুটান দেশের মানুষের জন্য নতুন। এ ফল চাষের জ্ঞান সাধারণ কৃষকদের মধ্যে নেই। উচ্চমূল্যের এ ফলটি চাষের পরিধি বাড়াতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে।

অনুগ্রহ করে এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

এই বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © ২০২৫ হেমন্ত কাল
ESAITBD Sof-Lab UAE/BD