মানিকছড়ির সাইল্যাচর-কুমারী সড়ক বেহাল: তিন কিলোমিটার কাদাময় পথে শত শত মানুষের দুর্ভোগ
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার ৪ নম্বর তিনটহরী ইউনিয়নের কুমারী একটি প্রত্যন্ত পাহাড়ি জনপদ। সবুজ প্রকৃতি আর পাহাড়-টিলা ঘেরা এ গ্রামটির সৌন্দর্য যেমন মোহিত করে, তেমনি সেখানে বসবাসরত মানুষের দুর্দশার গল্পও হৃদয় বিদারক।
প্রতিদিন কুমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা থেকে সাইল্যাচর বৌদ্ধ বিহার পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার কাঁচা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ মানুষ। বছরের অধিকাংশ সময়ই রাস্তার অবস্থা করুণ, আর বর্ষাকালে তা একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। সড়কজুড়ে কাদা আর গর্তে ভরা পরিস্থিতিতে হাঁটা হয়ে পড়ে চরম কষ্টসাধ্য।
সরেজমিনে রোববার (৩ আগস্ট) সকালে দেখা গেছে, কাঁচা সড়কের এক-তৃতীয়াংশ জায়গা ভেঙে গেছে। কোথাও কোথাও সৃষ্টি হয়েছে বড় গর্ত, চলাচলে সৃষ্টি হচ্ছে চরম বিঘ্ন। কৃষিপণ্য পরিবহন, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত এবং রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছানো—সব কিছুতেই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, “বছরের পর বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে এমন দুর্ভোগ চলছে, অথচ আজও কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। রাস্তার যেন কোনো অভিভাবকই নেই!”
প্রাথমিক শিক্ষার্থী উষাপ্রু মারমা বলেন, “প্রতিদিন স্কুলে হেঁটে যেতে হয় এই কাঁচা রাস্তায়। বর্ষায় কাদা মাটিতে জুতা আর কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। খুব কষ্ট হয়।”
স্থানীয় পাড়া কার্বারী উসামং মারমা বলেন, “বর্ষায় ছয় মাস শিশুদের স্কুলে যাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। রোগী হলে এখনো কাঁধে করে মূল সড়কে নিতে হয়। আমরা এই অবস্থা থেকে মুক্তি চাই।”
ইউপি সদস্য কংচাইরী মারমা জানান, “রাস্তাটির উন্নয়নের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ এবং এলজিইডি-তে একাধিকবার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, কিন্তু শুধু প্রতিশ্রুতিই পেয়েছি, বাস্তবায়ন হয়নি কিছুই।”
মানিকছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কাজী মাসুদুর রহমান বলেন, “আমরা সড়কটি সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। বরাদ্দ পাওয়া মাত্রই দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু করা হবে।”