ময়মনসিংহ শহরে আবু সাঈদ নামের এক প্রভাবশালী আওয়ামী ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে বিগত ১৭ বছর ধরে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন এবং বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
তার ভাই, যিনি সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে সভাপতি ছিলেন, সেই প্রভাবকে কাজে লাগিয়েই আবু সাঈদ ময়মনসিংহে নিজের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
এই আবু সাঈদের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগগুলো হলো: আবু সাঈদ তার ভাইয়ের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ময়মনসিংহ শহরে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেছেন। বিস্ময়করভাবে, গত ১৭ বছরে তার বিরুদ্ধে কোনো উল্লেখযোগ্য মামলা হয়নি বা তাকে একদিনের জন্যও জেল খাটতে হয়নি, যা তার ক্ষমতার গভীরতাকেই ইঙ্গিত করে।
তিনি ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী মেসোয়া বাজার কমিটির সভাপতির পদ ব্যবহার করে “আওয়ামী ফ্যাসিস্ট রূপ” ধারণ করেছেন বলে অভিযোগ। বাজারের বিভিন্ন মহল থেকে নিয়মিত মাসোহারা উত্তোলন এবং অন্যান্য অনৈতিক অপকর্মের সঙ্গে তিনি জড়িত বলে খবর পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে নিজ দলেও সমালোচিত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
আবু সাঈদ ময়মনসিংহ জেলা পরিবহন বাস মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি। এই পদ ব্যবহার করে তিনি তার নিজের মালিকানাধীন বেশ কিছু পরিবহন বাসকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রুটে অবৈধভাবে পরিচালনা করছেন। এর মাধ্যমে তিনি অবৈধ টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ।
বিদেশে সন্তানদের পড়াশোনা ও সম্পদের উৎস: তার এই বিশাল সম্পদের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি এই অবৈধ উপার্জিত অর্থ দিয়ে তার সন্তানদের বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত রাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন।
আবু সাঈদের এই দীর্ঘদিনের অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা এবং দৃশ্যমান সম্পদের উৎস নিয়ে ময়মনসিংহের সাধারণ জনগণ ও সচেতন মহলের মধ্যে গভীর অসন্তোষ ও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তাদের মতে, একজন সাধারণ ব্যবসায়ী হিসেবে এত অল্প সময়ে এত বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া অস্বাভাবিক।
তার বিরুদ্ধে ওঠা এসব গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর একটি নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এখন সময়ের দাবি। এই তদন্তের মাধ্যমে তার সকল অবৈধ কর্মকাণ্ড ও সম্পদের উৎস জনসম্মুখে উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই অভিযোগগুলোর সত্যতা প্রমাণিত হলে তা সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করার পথে একটি বড় পদক্ষেপ হবে।