জৈন্তাপুরে শিক্ষকতা জীবনের অবসানে বিদায় সংবর্ধনা, আবেগে ভাসলেন সাজেদা বেগম।
চার দশকের বেশি সময় ধরে শিক্ষকতা করে অবশেষে কর্মজীবনের ইতি টানলেন শাহজালাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগম। ১৯৮৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর জৈন্তাপুর উপজেলার পাকড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের মাধ্যমে শুরু হয় তাঁর শিক্ষকতা জীবন, আর সেটার শেষ হলো ২০২৫ সালের ৩১ জুলাই বৃহস্পতিবার বিদায়ী সংবর্ধনার মাধ্যমে।
বিদ্যালয়ের হলরুমে আয়োজিত এই বিদায় অনুষ্ঠানে সহকর্মী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চোখে জল দেখা যায়। সকাল থেকেই বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা প্রিয় শিক্ষিকাকে শেষ বিদায় জানাতে ভিড় করেন বিদ্যালয়ে। আবেগঘন পরিবেশে ফুল ও ভালোবাসায় ভরিয়ে তোলা হয় পুরো স্কুল প্রাঙ্গণ। অনুষ্ঠানের পর সাজেদা বেগমকে বিদ্যালয় থেকে নিজ বাড়ি পর্যন্ত ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে পৌঁছে দেন সহকর্মী ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবেদন হোসেন। সভাপতিত্ব করেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জুলহাস এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সমাজসেবক আকারামুল ইসলাম শামীম। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন চিকনাগুল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এবিএম জাকারিয়া।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন—
রনীফৌদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাক আহমদ
চিকনাগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুর আহমদ
শুকইনপুর ফরফরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাজুল হাসান
আসামপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শহীদ মিয়া
শিকারখাঁ ও উমনপুর সপ্রাবির সহকারী শিক্ষক নুরুল ইসলাম
এম আহমেদ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রমেশ চন্দ্র আদিত্য
সহকারী শিক্ষক জুমান আহমেদ
ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি জয়নাল হোসেন
জেলা সহকারী শিক্ষক সমিতির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. জাকারিয়া
উপজেলা শিক্ষক সমিতির সম্পাদক জালাল উদ্দিন ও যুগ্ম সম্পাদক সুমন চন্দ্র দেব
সহকারী শিক্ষক স্বপ্না রানী দেব, যিনি মানপত্র পাঠ করেন।
বক্তারা বলেন, সাজেদা বেগম শুধুই একজন শিক্ষক নন, তিনি ছিলেন একজন আদর্শ অভিভাবক। সততা, দায়িত্বশীলতা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে দীর্ঘ ৪১ বছর শিক্ষকতা করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর অবদান শুধু শ্রেণিকক্ষে নয়, বরং বিদ্যালয়ের উন্নয়নেও ছিলো অগ্রগণ্য।
বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলেই স্মৃতিময় মুহূর্তগুলো স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। ফুল, উপহার ও ভালোবাসায় সাজেদা বেগমকে সম্মান জানানো হয় তাঁর শিক্ষকতা জীবনের শেষ কর্মদিবসে।