কালাইয়ে স্ত্রী বটির কোপে ব্যাংক কর্মকর্তা স্বামী আহত
১০.৮.২৫
সাংসারিক ও দাম্পত্য কলহের জেরে জয়পুরহাটের কালাইয়ে বটির কোপে ব্যাংক কর্মকর্তা স্বামী মতিয়র রহমানকে গুরুত্বর যখম করার অভিযোগ ওঠেছে শিক্ষিকা স্ত্রীর বিরুদ্ধে। ঘটনার পর পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে বগুড়া টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের টাকাহুত গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গুরুত্বর আহত স্বামী মতিয়র রহমান টাকাহুত গ্রামের মুক্তিযোদ্ধ আব্দুল মতিন সরকারের ছেলে। তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংকে জুনিয়র অফিসার চাকরিরত আছেন। তাঁর স্ত্রী খাইরুন্নেসা সুমি উপজেলার বিনইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন।
পুলিশ, পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানান, শিক্ষিকা খাইরুন্নেসা সুমির চতুর্থ নম্বর স্বামী মতিয়র রহমান। তাঁর স্ত্রীর বাবার বাড়ি একই ইউনিয়নের বিনইল গ্রামে। সেই সুবাদে তিনি বিনইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক পদে চাকরি করছেন। পূর্বের স্বামীদের নিকট থেকে ডির্ভোসের পর খাইরুন্নেসা চতুর্থ স্বামী হিসেবে একই ইউনিয়নের টাকাহুত গ্রামে ব্যাংক কর্মকর্তা মতিয়র রহমানকে বিবাহ করেন। বিবাহের কয়েক মাস যেতে না যেতেই শুরু সাংসারিক কলহ। প্রতিনিয়ত তাদের মধ্যে দ্ব›দ্ব লেগেই থাকতো। এরই মধ্যে মতিয়র রহমানের বাবা তাঁর দুই বোনকে স্থানীয় মোসলেমগঞ্জ বাজারে একটি বাড়ি নির্মাণ করে দেন। এরপর থেকে সুমি তাঁর স্বামীকে বগুড়া শহরে একটি বাসা করে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এবং তাদের সন্তানের নামে ১০ লাখ টাকা ব্যাংকে ডিপোজিট করতে বলেন। এসব কারনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্ব›দ্ব লেগেই ছিল। হঠাৎ করে রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মতিয়র তার কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসময় দুইজন ওইসব বিষয় নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পরেন। একপর্যায়ে সুমি ঘর থেকে বটি নিয়ে তার স্বামীর মাথা, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপ মারলে মতিয়র মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্বামীকে ওই অবস্থায় ফেলে রেখে সুমি বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এ অবস্থায় পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে বগুড়া টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে তার অবস্থা আশংখাজন।
ব্যাংক কর্মকর্তা মতিয়রের বোন জান্নাতুন বলেন,‘আমার ভাবি একজন বেশী চাহিদার মহিলা। তাঁর চরিত্রও ভাল না। আমার ভাইয়ের আগে তার তিনজন স্বামী গত হয়েছে। তিনজনই ডির্ভোস করেছে। আমার ভাই তার চতুর্থ নম্বর স্বামী। তার দ্বারা সবকিছুই সম্ভব। আমার ভাইয়ের আজ যে অবস্থা, তাতে বাঁচবে না মারা যাবে তা বলা যাচ্ছেনা। আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা করবো।’
মতিয়রের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন সরকার বলেন,‘আমি অসুস্থ্য, স্ত্রী হয়ে আমার নিরহ ছেলে ও তার স্বামীকে যেভাবে বটি দিয়ে যখম করেছে তা ভাবাই যায় না। কিয়ামত আর বেশী দিন নেই। আমি ওর বিরুদ্ধে মামলা করবো।’
অভিযোগ অস্বীকার করে স্ত্রী খাইরুন্নেসা সুমি মোবাইল ফোনে বলেন,‘আমার স্বামী একজন নষ্ট চরিত্রের লোক। সে তার কর্মস্থল যমুনা ব্যাংকের এক হিন্দু নারী কলিকের সাথে নষ্টামি করে আসছে। আমি এসব বলায় সে নিজেই এমন ঘটনা ঘটিয়ে আমার উপর দোষ চাপাচ্ছে। আমিও ওর পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা করবো।’
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন,‘ওই ঘটনার বিষয়ে শুনেছি, তবে এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’